বাল্যবিবাহ বন্ধ করলেন শরীয়তপুর সদর ইউএনও মো. জিয়াউর রহমান


শরীয়তপুর সদর উপজেলার পালং উচ্চ বিদ্যালয় ও আংগারিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ টিম এবং সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তৎপরতায় ৪টি বাল্যবিবাহ বন্ধ হয়েছে। টিম পৌঁছার পূর্বেই একটি বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠিত হয়ে যায়। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন ইউএনও।

আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ টিম বুধবার ৩টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছে। নবম শ্রেণীর ছাত্রী সুমি (১৬) এর বাল্যবিবাহের সংবাদ পেয়ে বাল্যবিবাহ টিম আংগারিয়া ইউনিয়নের চরপাতাং গ্রামের দলিল মোল্যার বাড়ি যায়। সুমির বাবা দলিল মোল্যা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ টিমকে আস্বস্থ করে। তার মেয়ের বিয়ের পূর্ণ বয়স না হতে বিয়ে দিব না।
বুধবার পালং ইউনিয়নের চাঁদসার গ্রামের ফন্নু সরদারের মেয়ে অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী মিম আক্তার (১৪)’র বিয়ের আয়োজন করেন পরিবার। সংবাদ পেয়ে পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক সমন্বয়ে একটি টিম মিম আক্তারের বাড়ি যায়। পরবর্তীতে মিম আক্তারের বাল্যবিবাহ বন্ধ হয় এবং মিম এর পিতা ফন্নু সরদার মুচলেকা দিয়ে ঘোষণা দেন ১৮ বছর পূর্ণ না হতে মেয়ের বিয়ে দিবেন না।

টিমটি পরবর্তীতে তুলাসার ইউনিয়নের উপরগাঁও গ্রামরে ইলিয়াস বেপারীর মেয়ে আসমা (১৬) এর বিয়ে কন্ধ করতে গিয়েও সফল হয়েছে। আরও একটি বাল্যবিবাহের সংবাদ পেয়ে একই ইউনিয়নের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য রোকসানার বাড়ি যায়। গিয়ে দেখে ইউপি সদস্য রোকসানার মেয়ে দশর শ্রেণীর ছাত্রী লিজা (১৬)’র বিয়ে। তখন লিজার মা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কাজ করা ছাত্রীদের টিমকে সম্মান দেখিয়ে মেয়ের বিয়ে বন্ধ করে দেন।
টিমটি ঘটনাস্থলে পৌঁছতে কিছুটা বিলম্ব হওয়ায় চিতলিয়া ইউনিয়নের ফিরোজ মৃধার মেয়ে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী অমি (১৩)’র বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়। এ বিষয়ে টিমটি সদর ইউএনও’র সাথে যোগাযোগ করেন। ইউএনও অমির পিতা-মাতার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানিয়েছেন।
বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দলনেতা সুমাইয়া আফরোজ সুপ্তি ও পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের দলনেতা সুবর্ণা আক্তার বলে, আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমরা দেশ, জাতি ও মানুষের কল্যানে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ গড়ে তুলি। দেশ বাল্যবিবাহ মুক্ত হলে শিশু মৃত্যু ও মাতৃ মৃত্যুরহার কমবে।
মেয়েরা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দিতে পারবে। যেখানেই বাল্যবিবাহের সংবাদ পাই সেখানেই ছুটেযাই। প্রথমে আমাদের একটু কষ্ট হয়। যখন সফলতা পাই তখন আর কষ্ট থাকে না।
ইউএনও মো. জিয়াউর রহমান বলেন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি যে ভাবে কাজ করে যাচ্ছে তাতে অনেকটা সফলতা পাওয়া যাচ্ছে।এ কার্যক্রমের পাশে পুলিশ ও সাংবাদিকদের সহায়তা কামনা করছি। সকলের সমন্বয়ে বাল্যবিবাহ রোধে কাজ করলে খুব সহজেই সদর উপজেলা বাল্যবিবাহ মুক্ত হবে।

No comments

Powered by Blogger.